‘আই অ্যাম নট আ রোবট’ পরীক্ষা কেন দিতে হয়

 ‘আই অ্যাম নট আ রোবট’ পরীক্ষা কেন দিতে হয়



ইন্টারনেটে আমাদের প্রায়ই এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় যখন স্ক্রিনে ‘আই অ্যাম নট আ রোবট’ চেকবক্সে টিক চিহ্ন দিতে হয়। কখনো সখনো পর্দায় দেখা যায় বেশ কিছু ছবি, এবং বলা হয়, "ট্রাফিক লাইট কোথায় আছে চিন্হিত করুন।" এ ধরনের পরীক্ষা ক্যাপচা (CAPTCHA) নামে পরিচিত, যার অর্থ ‘কমপ্লিটলি অটোমেটেড পাবলিক টুরিং টেস্ট টু টেল কম্পিউটারস অ্যান্ড হিউম্যানস অ্যাপার্ট।’ সহজ কথায়, এটি একটি টেস্ট যা মানুষ ও কম্পিউটারকে আলাদা করতে সাহায্য করে।

ক্যাপচা এবং টুরিং টেস্টের উৎপত্তি
ক্যাপচা পরীক্ষাটি মূলত কম্পিউটারকে চ্যালেঞ্জ করতে ডিজাইন করা হয়েছে যেন তারা বুঝতে পারে কোনটা মানুষ এবং কোনটা যন্ত্র। এই আইডিয়ার ভিত্তি তৈরি করেছিলেন কম্পিউটার বিজ্ঞানী অ্যালান টুরিং। টুরিং টেস্টের মাধ্যমে তিনি কম্পিউটার ও মানুষের চিন্তাশক্তির পার্থক্য নির্ধারণের চেষ্টা করেন।

ক্যাপচা উদ্ভাবন
২০০০ সালে ইয়াহু প্রথম এই সিস্টেমটি ব্যবহার শুরু করে। অসাধু ব্যবহারকারীরা অসংখ্য ই-মেইল আইডি তৈরি করে স্প্যাম ছড়াচ্ছিল, তাই ইয়াহু এ সমস্যা সমাধানের জন্য কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটির পিএইচডি শিক্ষার্থী লুইস ভন অন ও তাঁর দলের সাহায্য নেয়। লুইস দেখেন, কিছু বিকৃত অক্ষর মানুষের পক্ষে পড়া সহজ হলেও কম্পিউটারের পক্ষে নয়। এভাবেই প্রথম ক্যাপচা উদ্ভাবিত হয় এবং ২০০১ সালে ইয়াহু এটিকে তাদের সেবায় অন্তর্ভুক্ত করে।

রিক্যাপচা এবং গুগলের হাত ধরে নতুন যুগ
২০০৭ সালে লুইস ভন আরও উন্নত ক্যাপচা উদ্ভাবন করেন—রিক্যাপচা, যা সহজে পড়া যায় এমন দুটি শব্দ ব্যবহার করে। ২০০৯ সালে গুগল এটি কিনে নেয় এবং এর পরে ছবি চিহ্নিত করা, মানব আচরণ পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাপচার নতুন সংস্করণগুলো তৈরি করে।

বই সংরক্ষণের জন্যও রিক্যাপচা ব্যবহৃত হয়, যেমন দ্য নিউইয়র্ক টাইমস তাদের ১৫০ বছরের আর্কাইভ সংরক্ষণে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই লুইস ভনই পরে জনপ্রিয় ভাষা শেখার অ্যাপ ডুয়োলিংগোর প্রতিষ্ঠা করেন

Post a Comment

0 Comments