খুলনায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি, হাসপাতালগুলোতে স্থান সংকট

 খুলনায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি, হাসপাতালগুলোতে স্থান সংকট



খুলনা ব্যুরো, 

খুলনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে ভিড় এতটাই বেড়েছে যে, বেডের অভাবে রোগীরা বারান্দা ও ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শুক্রবার রাতে সেতু নামের এক প্রবীণ আইনজীবীর সন্তানকে ডেঙ্গু শনাক্তের পর বাসায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল, তবে অবস্থা খারাপ হলে প্রায় আট ঘণ্টার চেষ্টা শেষে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা সম্ভব হয়।

শহরের সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী ভর্তি রয়েছে, যার মধ্যে ডেঙ্গু রোগী আছেন ৬৩ জন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মহসীন আলী ফরাজী বলেন, এখানে আলাদা ডেঙ্গু ওয়ার্ড করার জায়গাও নেই, তাই অন্যান্য রোগীদের মাঝেই ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এই বছরের শুরু থেকে খুলনা মেডিক্যালে ৫৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে এবং এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত চার দিনে মারা গেছেন চারজন। অন্যদিকে, খুলনা জেনারেল হাসপাতালের অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো; ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে শনিবার মাত্র ১২০ জন রোগী ভর্তি ছিল।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় শনিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি রোগী সংখ্যা ছিল ২৭৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন, এবং এই বছর বিভাগে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের।

বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও ভর্তির জন্য প্রচুর ভিড়। সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৫৭ জন ভর্তি রোগীর মধ্যে ৩৫ জন, গাজী মেডিক্যালে ৩১০ জনের মধ্যে ২৩ জন, আদদ্বীন আকিজ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪১৪ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ৭০ জনের মধ্যে ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) মাইকিং করলেও বিশেষ তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক এক সভায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মশা নিধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। কেসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. স্বপন কুমার দাস বলেন, মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা এবং ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধনের কার্যক্রম চলছে।

Post a Comment

0 Comments