**বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে সাতক্ষীরায় ৬ হাজার মৎস্য ঘের ও দেড় হাজার পুকুর তলিয়ে গেছে**
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও টানা বৃষ্টির প্রভাবে সাতক্ষীরা জেলার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন এবং ৬ হাজার মৎস্য ঘের ও দেড় হাজার পুকুর ভেসে গেছে। একই সঙ্গে শত শত বিঘা আমন ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে এবং অতিবৃষ্টির কারণে সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলের ৭০ থেকে ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভাঙার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকার বেতনা নদীর পাউবোর বাঁধ রোববার সন্ধ্যায় ভেঙে গিয়ে আশপাশের গ্রামগুলোতে পানি ঢুকে পড়ে। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত বাঁধ মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, ফলে প্লাবিত হয়েছে অন্তত ৫০ থেকে ৬০টি গ্রাম।
পানিবন্দী এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে আহসাননগর, হরিণখোলা, গোয়ালপোতা, গাছা, দক্ষিণ নগরঘাটা, হাজরাতলা, পালপাড়া, গাবতলা, নগরঘাটা, রথখোলা, কাপাসডাঙ্গা, বিনেরপোতা, খেজুরডাঙ্গা, গোপীনাথপুর, তালতলা, নিমতলা প্রভৃতি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকাও প্লাবিত হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পুরোনো সাতক্ষীরা, ঘুটেরডাঙ্গী, রামচন্দ্রপুর, লবণগোলা, পাথরঘাটা, জিয়ালা, ধুলিহর, ফিংড়ি, ফয়জুল্লাহপুর, দরবাস্তিয়া, কোমরপুর, মাছখোলা প্রভৃতি। এতে প্রায় ২০-২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় আছে।
জেলা মৎস্য বিভাগের উপ-পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, ৪,৭৮২ হেক্টর আয়তনের ৫,৭২১টি মৎস্য ঘের এবং ৭৯৭ হেক্টরের ১,৮২৩টি পুকুর তলিয়ে গেছে। প্রাথমিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ২,৬৩৩ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের খরাই বিল এলাকার মৎস্য চাষিরা বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ৫০ বিঘার ঘের ভেসে প্রায় ২০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান সঞ্চয় সরদার।
বেতনা নদীর বাঁধ ভাঙন নিয়ে সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, বন্যার কারণে বেতনা নদীর রিং বাঁধের ৪০-৫০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে, তবে দ্রুতই মেরামতের কাজ চলছে।
0 Comments