তামিম ইকবালের হৃদ্‌যন্ত্রে দ্রুত রিং বসানো সম্ভব হলো কীভাবে?

 তামিম ইকবালের হৃদ্‌যন্ত্রে দ্রুত রিং বসানো সম্ভব হলো কীভাবে?

হার্ট অ্যাটাকের পর কীভাবে এত দ্রুত তামিম ইকবালের চিকিৎসা করা সম্ভব হলো এবং কীভাবে অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে রিং বসানো গেল—এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে আলোচনা। এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের হৃদ্‌রোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবরার কায়সার।

হার্টে রিং বসাতে কত সময় লাগে?

হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। অ্যানজিওগ্রামের মাধ্যমে আক্রান্ত রক্তনালিতে রিং (স্টেন্ট) বসানো হলে রোগী দ্রুত সুস্থ হতে পারেন। যদি জটিলতা না থাকে, তবে এই পুরো প্রক্রিয়াটি খুব বেশি সময় নেয় না। আন্তর্জাতিকভাবে এটিই হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা। তবে বাংলাদেশে অনেক সময় রোগীদের হাসপাতালে আনতেই দেরি হয়ে যায়, কারণ সব হাসপাতালে অ্যানজিওগ্রাম বা স্টেন্টিংয়ের সুবিধা নেই।

প্রথম প্রতিক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

তামিম ইকবালকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার সময় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ট্রেইনার ইয়াকুব চৌধুরী তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর বুকে পাঞ্চ করছিলেন বলে জানা গেছে। এই পদ্ধতিটি জরুরি মুহূর্তে প্রাণ বাঁচাতে কার্যকর হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের সময় কেউ সাড়া না দিলে দ্রুত কার্ডিও-পালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) শুরু করা জরুরি। বুকে পাঞ্চ করা সিপিআরেরই একটি অংশ, যা হৃদ্‌যন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে। ট্রেইনার ইয়াকুব চৌধুরী সময়মতো এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি নিয়েছিলেন, যা তামিমের জীবন বাঁচাতে সহায়ক হয়।

দ্রুত চিকিৎসা ও স্টেন্টিং

তামিম ইকবালকে সাভারের নবীনগরে কেপিজে হাসপাতালে নেওয়ার পরপরই লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সেখানে অ্যানজিওগ্রাম ও স্টেন্টিং করার সুবিধা ছিল। হৃৎরোগ বিশেষজ্ঞ মনিরুজ্জামান মারুফের নেতৃত্বে প্রশিক্ষিত মেডিকেল দল দ্রুত অ্যানজিওগ্রাম, অ্যানজিওপ্লাস্টি এবং স্টেন্ট বসানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, তিনি করোনারি কেয়ার ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

সিপিআর শেখার প্রয়োজনীয়তা

তামিম ইকবালের এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো যে, জীবন বাঁচাতে সিপিআর শেখা অত্যন্ত জরুরি। এটি শুধু চিকিৎসকদের জন্য নয়, সাধারণ মানুষেরও জানা উচিত। সঠিক সময়ে সিপিআর প্রয়োগ করলে অনেকে জীবন ফিরে পেতে পারেন।

হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া উচিত। উন্নত চিকিৎসার জন্য দূরে কোথাও যেতে গিয়ে দেরি করার চেয়ে নিকটস্থ হাসপাতালেই চিকিৎসা নেওয়া ভালো, যেখানে অ্যানজিওগ্রাম ও স্টেন্টিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এতে মূল্যবান সময় বাঁচে এবং জীবন রক্ষা সম্ভব হয়।

Post a Comment

0 Comments