নতুন সংবিধান রচনা ও জুলাই হত্যাকারীদের বিচারের দাবি

নাগরিক সমাবেশে আওয়ামী লীগ সরকারের সংবিধান বাতিল করে দ্রুত নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি তোলা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদদের স্বজনরা একই সঙ্গে নির্বিচারে গণহত্যার নির্দেশদাতাদের দ্রুত বিচার করার আহ্বান জানান। শনিবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে তারা এই দাবি তোলেন। এই সমাবেশে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহিদ পরিবারের পুনর্বাসন, আহতদের চিকিৎসা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিও করা হয়। সমাবেশ থেকে জানানো হয়, হত্যাকারীদের বিচার ও মামলা পরিচালনার জন্য সাত সদস্যের আইনজীবী প্যানেল গঠন করা হয়েছে।
নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশের ছাত্ররা আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করেছে। আওয়ামী লীগের সংবিধান বাতিল করে দ্রুত নতুন সংবিধান করতে হবে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিহিংসা চাই না, অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করব যেন দ্রুত হত্যাকারীদের বিচার করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক দল শহিদদের কুরবানির পশুর হাটের মতো কেনাবেচা করছে, যা অত্যন্ত জঘন্য। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার নামে যারা রাজনৈতিক ফায়দা নিচ্ছে, তাদের এই অপসংস্কৃতি ত্যাগ করতে হবে, নইলে তরুণ সমাজ তাদের বর্জন করবে।
তিনি সেনাবাহিনীকে দ্রুত ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনীকে ফিরিয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি একটি শক্তিশালী পুলিশ কাঠামো গঠন করার আহ্বান জানান।
নাসিরউদ্দিন আরও অভিযোগ করেন, ফেনী, কুমিল্লাসহ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা অকার্যকর ছিল। শহিদ পরিবারের পুনর্বাসনে দুই মাসেও তেমন অগ্রগতি হয়নি। আহতদের সুচিকিৎসার জন্য রাষ্ট্রের দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান তিনি এবং শ্রমিক অঙ্গন ও পাহাড়ে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দাবি করেন।
দ্রব্যমূল্য ও বেকারত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন বেকার ও প্রান্তিক জনগণের দুরবস্থা না হয়, নইলে তারা প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কয়েক বছর ধরে জনগণের সঙ্গে অন্যায় করছে। সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা অব্যাহত আছে, যা ভারতের প্রতি নির্ভরতার ফল। তিনি বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে এবং দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
শহিদ মোমিনুল ইসলামের বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, তার ছেলে গুলশানে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় এবং এখনো হত্যাকারীদের বিচার হয়নি। অন্য শহিদদের স্বজনরাও তাদের সন্তানদের বিচার দাবি করেন, যাদের হত্যার পরেও এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি।
0 Comments