ঢাবিতে তোফাজ্জল হত্যার লোমহর্ষক বিবরণ দিলেন গ্রেপ্তারকৃত ৬ শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ছয় শিক্ষার্থী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন ওই শিক্ষার্থীদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। রাত ৯টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
স্বীকারোক্তি দেওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন মো. জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ, এবং ওয়াজিবুল আলম। তারা সবাই ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ছয় শিক্ষার্থীর জবানবন্দিতে তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তারা চোর সন্দেহে তোফাজ্জলকে তিন দফায় মারধর করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছাত্রদের ছয়টি মুঠোফোন ও মানিব্যাগ চুরি হয়। রাত ৮টার দিকে তোফাজ্জল হলের মাঠে প্রবেশ করলে তাকে চোর সন্দেহে আটক করে অতিথিকক্ষে নিয়ে মারধর করা হয়। পরে তাকে খাওয়ানোর পর আবারও মারধর করা হয়, যেখানে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।
ছাত্ররা আরও জানান, রাত ১২টার দিকে হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তোফাজ্জলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এর আগে, ১৯ সেপ্টেম্বর, ফজলুল হক মুসলিম হলে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ঢাবির এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও শিক্ষার্থীদের সহায়তায় পুলিশ ছয়জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে ফজলুল হক হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করার কারণে তোফাজ্জলকে আটক করা হয়। পরে গেস্টরুমে নিয়ে গিয়ে তাকে মারধর করা হয়। খাবার খাওয়ানোর পর আবারও মারধর করা হলে তোফাজ্জল অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
0 Comments